দারুল উলুম দেওবন্দ ও ব্রিটিশ সরকার

 সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়

মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।
দারুল উলুম দেওবন্দ ও ব্রিটিশ সরকার
---------------------
দেওবন্দীরা কিভাবে বৃটিশ সরকারের দালালী ও
তোষামদী করেছিল তার ঐতিহাসিক অনেক প্রামাণ্য
তথ্য পেশ করা হয়েছে এই গবষণাপত্রে। অথচ
এরাই আহলে হাদীসদেরকে বৃটিশদের সৃষ্টি,
ইংরেজদের দালাল ইত্যাদি বলে বলে মানুষকে
আহলে হাদীস বিদ্বেষী করে তুলে!! বড়ই
আশ্চর্য দেওবন্দীদের কার্যকলাপ!!
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
---------------------------------
দারুল উলুম দেওবন্দ ও ব্রিটিশ সরকার
(প্রযোজ্য জায়গায় দয়া করে নিচের ইমেজগুলো
বসিয়ে নিবেন)
——————————
উপমহাদেশের সুফীপন্থিরা (দেওবন্দী ও
ব্রেলভী) আহলেহাদীসদের সহ্য করতে
পারে না। কারণ আহলেহাদীসরা তাদের নানা বিদআত
ও বাতিল আকিদার সমালোচনা করে, মানুষকে কুরআন
ও সহীহ সুন্নাহর প্রতি দাওয়াত দেয়। দলিল প্রমাণে
যখন তারা আহলে হাদীসদের সাথে পারে না তখন
আহলেহাদীসদেরকে জনগনের মাঝে বিতর্কিত
করার লক্ষ্যে তাদের প্রতি নানা অপবাদ প্রয়োগ
করে থাকে। তাদের সহীহ দাওয়াতকে বিতর্কিত
করতে চায়, মানুষকে কুরআন ও হাদীসের সহীহ
দাওয়াত থেকে বিরত রেখে তাদের বিদআতী
কার্যক্রম চালু রাখতে চায়।
তারা আহলে হাদীসদের ব্রিটিশদের দালাল বলে
অপবাদ দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারাই ব্রিটিশদের
সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতো। ইতিহাসকে চেপে
রাখা যায় না। দেখুন দেওবন্দীরা ব্রিটিশ সরকারের
কত আজ্ঞাবহ ছিল –
ব্রিটিশ শাসকদের সম্পর্কে উপমহাদেশের
তৎকালীন হানাফী উলামাদের ফাতাওয়া – ব্রিটিশ
সরকারের সাথে জিহাদ করা হারামঃ
———————————————
ফাতাওয়া প্রদানের তারিখ: ১৭ই রবিউসসানী, ১২৮৭ হি.
(১৭ই জুলাই ১৮৭০)
এখানকার মুসলমানরা খ্রীস্টানদের দ্বারা সংরক্ষিত
(নিরাপদ), আর যেখানে নিরাপত্তা প্রদান করা হয়
সেদেশে কোন জিহাদ নেই। যখন মুসলমান ও
কাফেরদের মধ্যে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার অভাব
হবে সেখানে ধর্মীয় যুদ্ধ অপরিহার্য হবে, আর
এই শর্ত এখানে অনুপস্থিত। এছাড়া, এটা আবশ্যক যে
সেখানে মুসলমানদের বিজয় লাভ ও ইসলামের গৌরব
বজায় রাখার সম্ভাবনা থাকতে হবে। যদি সে রকম
কোন সম্ভাবনা না থাকে তবে জিহাদ করা হারাম।
তারপর মৌলভীগণ তাদের ফাতাওয়ার সমর্থনে
‘মানহাজুল গাফফার’ এবং ‘ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী’
থেকে আরবী উদ্ধৃতি উল্লেখ করেন।
ফাতাওয়া প্রদানকারীদের স্বাক্ষরঃ
মৌলভী আলী মুহাম্মাদ (লাখনৌ)
মৌলভী আবদুল হাই (লাখনৌ)
মুহাম্মাদ ফজলূল্লাহ (লাখনৌ)
মুহাম্মাদ নাইম (লাখনৌ)
মৌলভী রহমতুল্লাহ (লাখনৌ)
মৌলভী কুতুবুদ্দীন (দিল্লী)
মৌলভী ও মুফতী সাদুল্লাহ (লাখনৌ)
মৌলভী লুৎফুল্লাহ (রামপুর)
মৌলভী আলম আলী (রামপুর)
[সূত্র: ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টার, ইন্ডিয়ান মুসলমানস্, পৃ:
২১৪-২১৫]
ব্রিটিশ শাসন আমালে উলামায়ে দেওবন্দ
স্বাভাবিকভাবে মাদ্রাসা পরিচালিত করতো ও ওয়াজ
মাহফিল করে বেড়াতো:
——————————————
দেওবন্দিদের দাবী উলামায়ে দেওবন্দ
ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতো। যদি তারা সত্যিই
জিহাদ করতো তাহলে এত বড় একটা মাদ্রাসা ব্রিটিশ
শাসকদের সামনে কিভাবে তারা স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা
করতো। কমন সেন্স দিয়ে চিন্তা করুন।
“আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. এর জীবন ও
কর্ম ” নামে জীবনীগ্রন্থ লিখেছেন মাওলানা
আব্দুল কাইয়ুম হক্কানী সাহেব। কিন্তু ওনার
জীবনীর কোথাও ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ
বিষয়ক কোন শব্দ উল্লেখ নেই। বরং এমন দু’টি
বিষয় বর্ণিত হয়েছে যেটি ব্রিটিশদের সাথে
তাদের সুসম্পর্কের প্রমাণ বহন করে..
১. কাদিয়ানীদের ফিতনার বিরুদ্ধে তিনি কাদিয়ানে
মাহফিল করতে যান। কিন্তু কাদিয়ানরা সর্বাত্মকভাবে
ব্রিটিশ সরকারের মাধ্যমে চেষ্টা করেছে যে, এ
জলসা কাদিয়ানে যেন না হতে পারে। লেখক
বলেছেন (একটু খেয়াল করে পড়ুন) —
“কিন্তু উক্ত জলসাকে বাধা দেয়ার আইনগত
কোনো কারণ ছিলোনা। কেননা, সে
জলসাগুলোতে অত্যন্ত মার্জিত ও দৃঢ়তার সাথে
আলেমসুলভ বয়ান হতো এবং কোনো ধরনের
বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাহীনতার সুযোগ দেয়াহতো
না।”
[উক্ত বইয়ের বাংলা অনুবাদের ১৭৫ পৃ:]
=> উপরের কথা থেকে এটা স্পষ্ট তারা বিভিন্ন
স্থানে জলসা করে বেড়াতো ও ইংরেজরা কোন
বাধা দিতো না, কারণ তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে কিছুই
বলতো না। তাই নিরাপত্তা পেতো, কোন বিশৃঙ্খলা
হতো না।
২. ভাওলপুরে কাদিয়ানী ফেতনা জনিত কারনে এক
মহিলাকে সাহায্য করার জন্য এক মুকাদ্দমার সাথে শাহ
সাহেব জড়িয়ে পড়েন। সে কারণে দেওবন্দী
আরো বহু উলামাদের সাথে তাদের ইংরেজদের
আদালতে দীর্ঘদিন যাতায়াত করতে হয়েছে।
আনোয়ার শাহ কাশ্মিরীর সাথে পাকিস্থানের মূফতি
শফি সাহেবও ছিলেন। তাদের কথায় – ‘‘আদলতে
এত দেওবন্দী আলেম উপস্থিত ছিলেন যে
সেটাকে আদালত কক্ষের পরিবর্তে
দেওবন্দের দারুল হাদিস মনে হচ্ছিল………।’’ আর এ
মুকদ্দমা রায় দিতে পুরো দু’বছর লেগেছিল।
[এ বিষয়ে বৃহৎ বর্ণনা রয়েছে বইটির ১৮৪ থেকে
১৯১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত]
=> উপরের ঘটনা থেকে বুঝা যায়, তারা ইংরেজদের
বিরুদ্ধে কোন জিহাদ করতো না। যদি জিহাদই
করতো তাহলে ইংরেজদের আদালতে তাদের
এত সাবলীল আনাগোনা কখনও সম্ভব হতো না।
দেওবন্দীদের হযরতের ব্রিটিশদের সাথে খিযির
(আ:) দেখা এবং লড়াই করার ফায়দা নাই ঘোষনা করাঃ
——————————————
ইংরেজদের মোকাবেলায় যেসব লোকেরা
লড়াই করেছিলেন তাদের মধ্যে মাওলানা হযরত শাহ
ফায়সালুর রহমান গঞ্জ মুরাদাবাদী রহমাতুল্লাহ আলাইহিও
ছিলেন। হঠাৎ একদিন মাওলানাকে দেখা গেল যে,
তিনি স্বয়ং ভেগে যাচ্ছিলেন। আর বিদ্রোহী
দলের কোন এক নেতৃত্বদানকারী চৌধুরীর নাম
নিয়ে বলতে বলতে যাচ্ছিলেন যে, লড়াই করার
ফায়দাটা কি? খিযিরকে তো আমি ইংরেজদের দলে
দেখতে পাচ্ছি।
নওয়াব সাহেব আরেকটি ঘটনাও উল্লেখ
করেছেন যে, বিদ্রোহের পর যখন মুরাদাবাদের
একটি ফাঁকা মসজিদে হযরত মাওলানা গিয়ে ঠাই নিলেন
তখন ঘটনাক্রমে মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে
কোন কারণে ইংরেজ সেনাবাহিনী যাচ্ছিল। মাওলানা
মসজিদ থেকে দেখছিলেন। আচমকা সিঁড়ি বেয়ে
নেমে গেলেন, দেখা গেল যে তিনি ইংরেজ
সেনাবাহিনীর একজন ঘোড়ার দেখ-ভালকারির
(রাখালের) সাথে কথা বলছেন। তার সাথে কথা বলে
তিনি মসজিদের দিকে ফিরে আসলেন। (লেখক
বলেন) আমার ঠিক মনে নেই যে আমি জিজ্ঞাসা
করার পর নাকি তিনি নিজে নিজেই বলতে লাগলেন
যে, ঘোড়ার যে রাখালের সাথে আমি কথা বলছিলাম,
তিনি ছিলেন খিযির আলাইহিস সালাম।
[সওয়ানিহে ক্বাসেমী, পৃ:১০৩]
=> চমৎকার!! আপনারা ইংরেজদের সাথে খিযির (আ:)-
কে দেখবেন (!), লড়াই করার ফায়দা নাই ঘোষণা
দিবেন, আর আহলে হাদীসদের ব্রিটিশদের দালাল
বলবেন……… সত্যি বড়ই বিস্ময়কর!!!
ব্রিটিশ স্পাইয়ের গোয়ান্দা রিপোর্ট – মাদ্রাসা দারুল
উলুম দেওবন্দ, ইংরেজ শাসকদের জন্য নিরাপদঃ
——————————————————
মুহাম্মাদ আইয়ুব কাদিরী ‘মাওলানা মুহাম্মাদ আহসান
নানোতভী’-র জীবনী গ্রন্থ লিখেন।
সেখানে তিনি একজন ব্রিটিশ স্পাই/গোয়েন্দার
দেওবন্দ মাদ্রাসাকে নিয়ে এক প্রতিবেদনের কথা
উল্লেখ করেন। দেওবন্দীরা সে কাহিনীর
মধ্যে রঙ মাখিয়ে নেটে প্রকাশ করেছেন।
নিচের লিংক ফলো করলে তা দেখতে পাবেন।
ব্রিটিশ গোয়েন্দার নাম ছিল জন পামার (John
Palmer)। লেফটেনেন্ট গভর্ণর তাকে
পাঠিয়েছিলেন দেওবন্দ মাদ্রাসা সম্পর্কে অনুসন্ধান
করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। এই গোয়েন্দা
ব্রিটিশ সরকারের নিকট যে রিপোর্ট পেশ
করেছিলেন তা নিচে দেওয়া হল –
“কলেজে হাজার টাকা খরচ করে যে প্রচেষ্টা এবং
কার্যক্রম অর্জিত হয় তা এখানে সামন্য পরিমাণ পেনি
খরচ করেই অর্জিত হচ্ছে। প্রিন্সিপালের পিছনে
হাজার রুপী খরচ করে যে কার্যক্রম ও প্রচেষ্টা
পাওয়া যায় সেখানে এখানকার মৌলভীদের ৪০ রুপী
মাসিক বেতনে তা পাওয়া যাচ্ছে। এই মাদ্রাসা ব্রিটিশ
রাজের (সরকারের) বিরুদ্ধে নয়। বরং এটা ব্রিটিশ
সরকারের অনুগত, প্রশংসাকারী এবং সক্রিয়ভাবে
সম্পর্কযুক্ত……তারপর তিনি আরো বলেন যে এটা
যেকোন মুসলমানের জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান, এবং এর চেয়ে ভাল প্রতিষ্ঠান আর হয় না,
এমনকি অমুসলিমদেরও এখানে এসে শিক্ষাগ্রহণ করা
উচিত………”
[মাওলানা মুহাম্মাদ আহসান নানোতভী, পৃষ্ঠা ২১৭;
আরো দেখুন সাইয়িদ ইশতিয়াক আযহারের ‘ফখরুল
উলামা’ পৃষ্ঠা ৬০]
=> কি সুন্দর তাই না? যাদের বিরুদ্ধে জিহাদ সেই
ব্রিটিশদের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলে, দেওবন্দ
মাদ্রাসা তাদের জন্য হুমকি নয়, বরং ব্রিটিশ সরকারের
অনুগত, প্রশংসাকারী, ও অন্তরঙ্গ!!
আশরাফ আলী থানভী-র বক্তব্যঃ ব্রিটিশরা আমাকে
আরাম দিয়েছিল, তাই আমার শাসনক্ষমতা থাকলে আমিও
তাদের আরাম দিতাম ।
————————————
আশরাফ আলী থানভী-র বক্তব্যঃ
“তিনি এক বাণীতে বলেন, এক ব্যক্তি আমাকে
জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনার যদি শাসনক্ষমতা/
সরকার থাকতো, তাহলে ব্রিটিশদের সাথে আপনি
কেমন ব্যবহার করতেন? আমি (আশরাফ আলী
থানভী) উত্তরে বললাম, ‘আমি তাদের শাসন
করবো যদি আল্লাহ আমাকে সরকার দেন, আমি
তাদের উপর শাসন করবো কিন্তু তাদেরকে সহজ
ও আরামের সাথে দেখাশুনা করবো, কারণ তারা
(ব্রিটিশরা তাদের শাসনকালে) আমাকে আরাম
দিয়েছিল (অর্থাৎ আরাম আয়েশ দিয়ে আমাকে
দেখাশোনা করেছিল।)। ইসলামের শিক্ষাও এটা, আর
পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে এই শিক্ষা পাওয়া যাবে
না। ফলে, এই ঐশ্বরিক শিক্ষা এতটাই বিস্তৃত যে,
এমনকি অমুসলিমদের অধিকারগুলোও সেখানো
সংরক্ষণ করা হয়।”
[মালফূযাত হাকীমুল উম্মাহ (৬/১০২, নং. ৮৭) (আরো
দেখুন, আল-আফাযাতুল ইয়াউমিয়্যাহ মিনাল আফাদাতুল
ক্বাউমিয়্যাহ; ৬/৭৯, বানী নং ৮৭)]
=> যাদের সাথে জিহাদের দাবী প্রচার করছেন,
সেই ব্রিটিশরাই তাদের শাসনকালে আপনাদের
আকাবীরদের আরামের ব্যবস্থা করেছিল, এটা
কোন ধরণের জিহাদ?
আশরাফ আলী থানভী ব্রিটিশদের থেকে ৬০০
রুপী মাসিক ভাতা পেতেনঃ
—————————————–
এটা জানা গেছে যে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার
মাওলানা আশরাফ আলী থানভীকে আরাম দিয়েছিল
এবং তাকে আয়েসী জীবনযাপন করার ব্যবস্থা
করেছিল। এখন কথা হলো এই আরামের,
আয়েসী জীবনযাপনটা কেমন ছিল? এই আরাম
দেয়ার বিষয়টা হল ব্রিটিশ সরকার আশরাফ আলী
থানভীকে মাসিক ৬০০ রুপী ভাতা দিতেন। অফিসিয়ালি
এর কোন মৌখিক স্বীকৃতি নেই, কিন্তু এটা
দেওবন্দীদের নিকট জানা বিষয় কিন্তু তারা এটা
চেপে রাখে প্রকাশ হতে দেয় না।
জামিয়াতে উলামায়ে হিন্দ এবং জামিয়াতে উলামায়ে
ইসলাম এর মাসিক পত্রিকা যেটি দেওবন্দীদের
রাজনৈতিক ফ্রন্ট – তার নাম ‘মাকালাহ আস-সাদরাইন’। এটি
দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত হয়। সেখানে প্রকাশিত
হয়েছে যে –
“দেখুন হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী
ছিলেন আমাদের এবং আপনাদের মুসলিম অগ্রজ এবং
নেতা, তার সম্পর্কে লোকজনদের থেকে
বলতে শোনা গেছে যে তিনি (ব্রিটিশ) সরকার
থেকে ৬০০ রুপী মাসিক ভাতা পেতেন। এর সাথে
তারা আরও বলতেন মাওলানা এটা জানতেন না যে
ব্রিটিশ সরকার তাকে এই রুপী দিচ্ছে, তারা তাকে
এরূপ ভাবে রুপী দিতেন যাতে তিনি এ বিষয়ে
কোন সন্দেহ না করেন।”
(মাকালামাহ আস-সাদরাইন, পৃ: ৯)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে ম্যাঙ্গো কুলফি কোথা থেকে
আসতো এবং কেন আসতো। জামিয়াতে উলামায়ে
হিন্দ আজ জামিয়াতে উলামা ইন্ডিয়া নামে পরিচিত যারা
বছরের পর বছর আহলে হাদীস ও সালাফীদের
প্রতি সকল প্রকার বিষ ঢালছে, যতভাবে পারে
আহলে হাদীসদের প্রতি বিষোদগার করে
যাচ্ছে। এমনকি তাদের বর্তমান উস্তাদ বৃটেনে
সালাফীদের বিরুদ্ধে এক আন্তর্জাতিক
কনফারেন্স এর আয়োজন করেছিলেন। হুসাইন
আহমাদ মাদানীর পূত্র, জামিয়াতে উলামায়ে ইন্ডিয়া এর
প্রেসিডেন্ট , সাইয়িদ আরশাদ মাদানী যিনি দারুল উলুম
দেওবন্দের হাদীসের উস্তাদ, তিনিও
খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেছেন যে তারা
ব্রিটিশ সরকারের বেতনভুক্ত ছিলেন। (মাকালাহ আস-
সাদরাইন পৃ: ৭)
নিচের মাকালাহটি পড়ুন –
তাবলীগ জামায়াতও ব্রিটিশদের বেতনভুক ছিলঃ
————————————————–
মাকালাহ সাদরাইন পত্রিকায় এটাও উল্লেখ করা হয়েছে
যে এমনকি জামায়াতে তাবলীগ, অর্থাৎ মাওলানা ইলিয়াস
কান্দলভীও ব্রিটিশ সরকার থেকে রুপী পেতেন
হাজী রশীদ আহমেদ এর মাধ্যমে যা পরবর্তিতে
বন্ধ করে দেয়া হয়। এই পত্রিকাতে এটাও উল্লেখ
রয়েছে যে ব্রিটিশ সরকারের সময় একজন হিন্দু
যখন প্রশাসনিক পদে বসলেন তখন তিনি সরকারকে
জানালেন যে রুপী এই সুফী দেওবন্দী ও
তাবলীগীদের পিছনে ব্যয় করা হচ্ছে তা পুরাই
অনর্থক এবং অর্থের অপচয়।
(স্বম্ভবত: এটা এ কারণে যে তারা ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে বসতো
এবং ম্যাঙ্গো কুলফি পেতো)
(মাকালাহ আস-সাদরাইন, পৃ: ৮)
মাওলানা ক্বাসিম নানোতবী এবং মাওলানা মুহাম্মাদ
তাইয়্যিবঃ
————————————
মাওলানা ক্বাসিম নানোতবী সাহেবের জীবনী
লিখেছেন মাওলানা সাইয়্যিদ মানাযির আহসান ঘিলানি। বইটি
৩ খণ্ডে প্রকাশিত। তিনি এটি তখনকার দারুল উলুম
দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রধান দায়িত্বে নিয়োজিত মাওলানা
মুহাম্মাদ তাইয়্যিব সাহেবের অনুরোধ ও নির্দেশনায়
লিখেছেন। তিনি এই জীবনী গ্রন্থের দ্বিতীয়
খণ্ডের এক অংশে একটা টীকা সংযোজন
করেছেন যেখানে শুধু কাসিম নোনতবীর প্রতি
নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি বরং সকল দেওবন্দী
বয়োজ্যোষ্ঠদের প্রতিও প্রযোজ্য!!! তিনি
বলেন,
“এমনকি ওনার (ক্বাসিম নানোতবীর) শহরের
কোন ঘটনার ব্যাপারে কোন আগ্রহ ছিল না এবং
(দেওবন্দের) যে সকল পুরানো কর্মচারী, আর
সরকার থেকে পেনশন পাচ্ছিলেন তাদেরও (সে
ব্যাপারে) কোন আগ্রহ ছিল না। ফলে তাদের
(দেওবন্দীদের বিশ্বস্ততার) ব্যাপারে তাদের
(ইংরেজদের) সন্দেহ করার কোন প্রকার অবকাশ
ছিলনা।”
(সাওয়ানেহ ক্বাসিমি, ২/২৪৭)
মাওলানা রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহী নিকট ব্রিটিশ সরকার
ছিল রেহেম দিল সরকারঃ
——————————————
মাওলানা আশিক ইলাহী মিরাঠী (যিনি একজন সুপরিচিত
দেওবন্দী কর্তৃপক্ষ) মাওলানা রশীদ আহমেদ
গাঙ্গুহীর জীবনী গ্রন্থ লিখেছেন, যার নাম
তাযকিরাতুর রশীদ। সেখানে উল্লেখ করা নিচের
বাক্যটিই বলে দেয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের
প্রতি রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহীর দৃষ্টিভঙ্গি কেমন
ছিল –
“দরদী/সহানুভুতিশীল সরকার” [তাযকিরাতুল রাশীদ,
১/৭৬]
মাওলানা ক্বাসিম নানোতবী সম্পর্কে মাওলানা আশিক
এলাহী মিরাঠী লিখেছেন,
“ঠিক আপনাদের মতো ব্যক্তিগণ যারা মন থেকে
দরদী (ইংরেজ) সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন,
এবং (কামনা করি) এই সমবেদনা চিরদিন (আপনাদের
মাঝে) বজায় থাকুন।” [তাযকিরাতুল রাশীদ (১/৭৯)]
যখন ভুলক্রমে ইংরেজ সরকার নানোতবী
সাহেবকে গ্রেফতার করতে আসে তখন তারা
জিজ্ঞেস করে ‘মৌলভী মুহাম্মাদ কাসিম নানোতবী
কোথায়?’ তখন নানোতবী এক কদম সামনে
এগিয়ে আসেন এবং পিছন থেকে তার পায়ের
দিকে তাকিয়ে থাকেন, বলেন, “তিনি ঠিক ওখানে
ছিলেন” এবং তারপর হাটতে থাকেন!!
=> হ্যা, এই হলো দেওবন্দী আকাবীরদের
ইংরেজদের সাথে বীরদর্পে লড়াই করার নমুনা!!
তারা ইংরেজদের প্রতি কতটা নতজানু ছিল!!, এমন কি
সত্যটাও বলতে পারতেন না।
ব্রিটিশ সরকার দেওবন্দীদের মালিক, আর মালিক
গোলামকে নিয়ে যা ইচ্ছা করতে পারেনঃ
———————————
১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ হওয়ার পর ব্রিটিশ
ঔপনিবেশিক সরকার শঙ্কিত ও সতর্ক হয়ে যায় এবং
সকলের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে থাকে এবং
সে কারণেই তারা মাওলানা রশীদ আহমেদ
গাঙ্গুহীর খোঁজে মাদ্রাসায় যান তাকে কিছু বিষয়
জিজ্ঞেসা করার জন্য –
তাই মাওলানা রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহী লিখেছেন,
“পৃকতপক্ষে আমি যেখানে সরকারের আজ্ঞাবহ,
তখন আমার বিরুদ্ধে (বিদ্রোহ, বিরোধী বা
বিশ্বাসঘাতকতার) মিথ্যা অভিযোগ আমার কোন ক্ষতিই
করতে পারবে না। আর যদি আমায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়
তবে সরকার আমার প্রভু এবং তিনি যা ইচ্ছা করতে
পারেন।” (তাযকিরাতুল রাশীদ, ১/৮০)
এছাড়াও তাযকেরাতুর রাশীদ গ্রন্থে এই ধারণাও
প্রকাশ করা হয়েছে, যারাই দলত্যাগী হবে, ইংরেজ
সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে তাদের
বিরোদ্ধে জিহাদে রত থাকতে হবে। এমনকি তারা
যদি এইসব দলত্যাগী, ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহকারীদের সাথে ইংরেজদের পক্ষ
হয়ে যুদ্ধ করে মারা যায় তারা শহীদ হিসেবে গণ্য
হবে। যার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই মাওলানা
রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী এবং তার আধ্যাতিক
পথপদর্শক যামিন আলী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে
ইংরেজদের পক্ষ যুদ্ধ করেছেন। এবং তারাই
সত্যিকারভাবে এটা আকড়ে ধরেছিলেন। [দেখুন
তাযকেরাতুর রাশীদ, ১/৭৪-৭৫]
আহত ব্রিটিশ ভাইসরয়ের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ এবং
ভাইসরয়ের সুস্থতার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনাঃ
——————————
দেওবন্দীরা সবসময়ই ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ
সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রেমের সম্পর্ক বজায়
রেখে চলত।
১৮৭২ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ভাইসরয় চার্লস হার্ডিংকে
নয়াদিল্লিতে হিন্দু বিপ্লবীদের একটা গ্রুপ গৃহে
বানানো একটি বোমা দিয়ে আঘাত করে। ভাইসরয়
আহত হন কিন্তু মাংসপেশিতে জখম নিয়েই পালাতে
সক্ষম হন। তারপর দেওবন্দী স্কলারগণ
নিম্নোক্ত বিবৃতি তাদের মাসিক পত্রিকায় প্রকাশ
করেন। পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলে হাবীবুর রহমান
কিন্তু বিবৃতিতে তিনি যা উল্লেখ করেছেন যা সত্যিই
জঘন্য। দেখুন তারা কিভাবে ইংরেজ সরকারের প্রতি
নতজানু ছিলেন-
মহামান্য ভাইসরয়ের উপর আক্রমণঃ
(কিছুক্ষন বকবক করার পর…) দুর্ভাগ্যবশত ভারতে
পাশ্চত্য শিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে বোমাও
(বানানো ও নিক্ষেপ করনে) প্রসারিত হচ্ছে। গত
কয়েক বছরে বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে কিন্তু সকল
ঘটনার ভিতরে সবচেয়ে জঘন্য এবং সবচেয়ে
বেশি শান্তি বিনষ্টকারী ঘটনা হল মহামান্য লর্ড হার্ডিংস
এর মতো এক দরদী ও সহানুভুতিশীল ব্যক্তির
আহত হওয়ার ঘটনা। যখন তিনি দিল্লীতে (ব্রিটিশরা
যখন কলকাতা থেকে রাজধানী দিল্লীতে
স্থানান্তরিত করেছিল) পক্ষপাতহীনভাবে প্রবেশ
করছিলেন তখন এক অজানা আততায়ী তাকে লক্ষ্য
করে বোমা নিক্ষেপ করে। সময়টা ছিল ১৯১২
সালের ২৩শে ডিসেম্বর (যা ছিল ভারতের নতুন
যুগে প্রবেশের প্রথম দিন)। এতে মহামান্য
ভাইসরয় গুরুতরভাবে আহত হন।
দারুল উলুম (দেওবন্দ) এর শুরা, উস্তাদগণ, বর্তমান
ছাত্র, পুরাতন ছাত্র (অর্থাৎ জামিয়াতে উলামায়ে হিন্দ,
ইন্ডিয়া) সকলেই এই ট্রাজিক ঘটনায় মর্মাহত। মাওলানা
মুহাম্মাদ আহমাদ (মাওলানা কাসিম নানোতবীর ছেলে)
সকল বন্ধুদের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি সহানুভুতি
জানিয়েছেন এবং (সেই সাথে) এরূপ একটি ঘটনার
প্রতি ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। যার
উত্তরে (ব্রিটিশ সরকার) ধন্যবাদ প্রেরণ
করেছেন।
আল্লাহর তাআলার প্রতি সকল প্রশংসা যে মহামান্য
ভাইসরয়ের জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয় নি এবং লেডি
হার্ডিংসও রক্ষা পেয়েছেন। এবং মহান আল্লাহর
রহমতে সম্মানিত ভাইসরয় দিন দিন সুস্থতার দিকে
আগাচ্ছেন। আমরা আশাকরি মহামান্য খুব শীঘ্রই
দিল্লিতে তার কাউনসিল খোলবেন।”
[আল-ক্বাসিম, ভলি. ৩, ইসু ৬, ১৩৩১ মুহাররম, (এর
শিরোনাম পাতায় প্রকাশ পাচ্ছে যে এটি দেওবন্দ
মাদ্রাসা থেকে প্রকাশিত)]
=> কি অবাক হয়ে গেলেন! বড় গলায় কথা বলেন
আর সালাফী ও আহলুল হাদীসদের উপর আক্রমণ
করেন। নিজের অবস্থান চিন্তা করুন। ইংরেজদের
থেকে ম্যাঙ্গো কুলফী খান, আর আহলে
হাদীস যারা কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী দ্বীন
পালনে সচেষ্ট থাকেন তাকে বলেন
ইংরেজদের দালাল, ভিক্টোরিয়ান!!
দেওবন্দী মুরুব্বীগণ ইংরেজরা নাখোস হবেন
এমন কিছু করা থেকে সতর্ক থাকতেনঃ
———------------—————
ব্রিটিশদের সহায়তায় আরেকটি আধুনিক হানাফী মাদ্রাসা
তখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যার নাম আলীগড়। দুইজন
সুপরিচিত, বিশিষ্ট দেওবন্দী হানাফী বিদ্বান মাওলনা
মাহমাদুল হাসান এবং মাওলানা উবাইদুল্লাহ সিন্ধি উভয়
প্রতিষ্ঠানের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে
চেয়েছিলেন যাতে একতাবদ্ধভাবে ব্রিটিশ বিরুধী
মনোভাব সৃষ্টি হয়। তবে দেওবন্দ ও
আলীগড়ের নেতৃস্থানীয়গণ এর পক্ষে
ছিলেন না এবং তারা ইংরেজ সরকারকে অসন্তুষ্ট
করতে চান নি। হাফিয মুহাম্মাদ আহমাদ (কাসিম
নানোতবীর ছেলে) যিনি দেওবন্দ মাদ্রাসার
দায়িত্বপ্রধাণ ছিলেন তিনি ইতিমধ্যে ব্রিটিশদের নিকট
থেকে একটি স্বীকৃতির টাইটেল/খেতাব (শামসুল
উলামা) লাভা করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে তিনি উত্তর
প্রদেশের ব্রিটিশ সরকারকে সন্তুষ্ট রাখতেন এবং
মাওলানা মাহমুদুল হাসান কার্যক্রম সম্পর্কে সরকারকে
অবহিত করতেন। মাহমুদুল হাসান কিছুটা
বিদ্রোহভাবাপন্ন ছিলেন, তবে মাথায় রাখবেন
দেওবন্দে তিনিই একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন, আর
এর পিছনে ভিন্ন কারণও ছিল। মাওলানা মুহাম্মাদ আহমাদ
(নানোতবীর ছেলে) ঐ অঞ্চলের গভর্নরের
সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন এবং প্রায়ই তাদের
কার্যক্রম সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করতেন
যাতে এই দারুল উলমকে সরকারের কঠোর দৃষ্টি
থেকে রক্ষা করা যায়।
এই সম্পর্ক আরোও উত্তোরিত হয় যখন উত্তর
প্রদেশের গভর্নরকে দেওবন্দ থেকে
আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং নিম্নবর্ণিত প্রশংসাপত্রটি
তার সম্মানে পাঠ করা হয় –
“হে সম্মানিত! ইন্ডিয়ার শাসক, মহামান্য ভাইসরয়-কে
মাওলানা মুহাম্মাদ আহমাদ কে তাদের হৃদ্যতাপূর্ণ
আন্তরিক প্রশংসাপূর্ণ ‘শামসুল উলামা’ খেতাব প্রদানের
জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সরকারের এই কার্যক্রম শুধু
এটাই প্রতিষ্ঠা করে না যে তারা যোগ্য/উপযুক্ত
মুসলিম নেতা ও শাইখদের সম্মান করে বরং এটা
তাদেরও অভিযোগের জবাব যারা (ব্রিটিশদের
থেকে) স্বাধীনতার দাবী করে অথচ তারা (ব্রিটিশ
সরকার) যোগ্যতমদের সম্মান ও মর্যাদা দেয়।
একথাই সঠিক এবং আমরা এই বাস্তবতাকে গ্রহন করি।
এটা এমন না যে আমরা এই বস্তুবাদী ও পার্থিব
কোন স্বার্থের কারনে বা ধর্মীয় কোন
বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে এই দিকে ঝুকে
পড়েছি। যাহোক, আল্লাহর ইচ্ছার ফলে যদি বর্তমান
শাসক এবং সরকার আমাদের কোন সম্মান বা মর্যদা
প্রদান করে তাহলে কেন তা আমরা গ্রহণ করব না?…
(কিছু বকবকের পর…) হে সম্মানিত, আজ আমরা
আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ প্রদানের জন্য সমবেত
হয়েছি। আপনার বদান্যতা এবং অনুকম্পা শুধুমাত্র
রেক্টর (দেওবন্দের দায়িত্বপ্রদান) এর প্রতিই নয়
বরং সকল গোষ্ঠীর প্রতি, এবং অনুরূপভাবে
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আপনার দারুল উলুম দেওবন্দের
প্রতি অনুকম্পা এবং (আর্থিক) অনুগ্রহ প্রদানের জন্য
যা আমাদেরকে রেক্টর (দেওবন্দ মাদ্রাসার
দায়িত্বপ্রধান, কাসিম নানোতবীর ছেলে মাওলানা
মুহাম্মাদ আহমাদ) নিয়মিত অবহিত করেন। একইভাবে
এই সমস্ত অনুকুল শর্তসমূহের কারণে দারুল উলুম
দেওবন্দ আজ মুসলমান জনগনের নিকট আস্থাপূর্ণ
হবে। আর আমাদের পলিসি আরো জোরদার করা
হবে যে বিষয়ে ইউরোপের বেশিরভাগ অফিসার
আমাদের ব্যাপারে প্রশংসা করে যাচ্ছেন।
আমাদের আকাঙ্ক্ষা একটাই, শুধুমাত্র একটিই অভিপ্রায়,
তাহলো ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখা, আর এটা ছাড়া
অন্য কোন অভিপ্রায় নেই। অতএব এর বাইরের
কোন কিছু অর্থাৎ যেকোন রাজনৈতিক আন্দোলন
প্রত্যাখ্যান বা গ্রহণ করা আমাদের প্রতিষ্ঠিত ও
অপরিবর্তনীয় মতাদর্শের বাইরে।”
[রেফারেন্স: রশীদ আহমেদ জালানধারীর পত্রিকা
‘আল-মা’রিফ’ লাহোর, ১৯৯৬, জুলাই-ডিসেম্বর, পৃ:
৭১-৭৩, আরো দেখুন, রশীদ আহমাদ জালানধারীর
‘দ্য টিচিং কারিকুলাম ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া – দারুল উলুম
দেওবন্দ – এ হিস্টরিক্যাল রেকর্ড, ৫/৫১-৫৪; ‘দ্য
এক্সপালসন অফ মাওলানা উবাইদুল্লাহ সিন্ধি ফ্রম দারুল
উলুম দেওবন্দ’, আল-ওয়ালী জার্নাল (ভলিউম ১৫,
ইসু-২ ও ৪ (পৃ: ৩০-৩২) ১৯৯১, বাই আবু সালমান শাহ
জাহানপুরি)]
=> উপরের কথাগুলো প্রমাণ করে ব্রিটিশদের
সাথে দেওবন্দ মাদ্রাসার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
মাওলানা হুসাইন আহমাদ এর ছেলে মাওলানা আসাদ
মাদানী এটাও বলেছেন যে মাওলানা মাহমুদুল হাসান
অসতর্কভাবে ব্রিটিশ সরকারের বিপদ ডেকে
এনেছিলেন।
দেওবন্দীরা ব্রিটিশদের বিশেষ কোন দিবসকে
জাঁকজমকভাবে পালন করতেনঃ
———————————–
প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড. বারবারা ডেলি মেটকাফ তার
বইয়ে রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী ও
দেওবন্দীদের সম্পর্কে লিখেছেন:
“দেওবন্দীরা সকল উপায়ে সকল অবস্থায় তাদের
(ইংরেজদের) বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করেছিল।
ব্রিটিশদের সাথে পাছে না আবার তাদের রাজনৈতিক
সুসম্পর্ক সন্দেহপূর্ণ হয় সেই ভয়ে রশীদ
আহমদ গাঙ্গুহী এক বছর আফগানিস্থানের শাহ
থেকে ৫০০০ রুপী অনুদান গ্রহন করতে
অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
এবং এই মাদ্রাসায় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক দিবস পালন করা
হতো, যেমন যথাযথ জাঁকজমকের সাথে রাজার
সিংহাসন আহোরনের দিবস (রাজ্যাভিষেক দিবস) পালন,
এবং বিভিন্ন সংকটের সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের
আয়োজন করা হতো যেমন কুইন ভিক্টোরিয়ার
শেষ অসুস্থতার সময় তারা বিশেষ প্রার্থনা ও বানী
প্রেরণ করা।”
[ইসলামিক রিভাইভাল ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, ১৮৬০-১৯০০, পৃষ্ঠা
১৫৪-১৫৫; প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন,
১৯৮২]
শেষ কথাঃ
———
দেওবন্দীরা শুধু ব্রিটিশদের নয় বর্তমান হিন্দু
সরকারের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখে। দেওবন্দ
মাদ্রাসার ১০০ বছর পূর্ণ উপলক্ষে ইন্দিরা গান্ধিকে
প্রধান অতিথি বানিয়েছিল এবং সে অনুষ্ঠানে ইন্দিরা
গান্ধির সম্মাননায় তারা ক্রেষ্ট প্রদান করেছেন।
সুতরাং হে দেওবন্দী ভাইগন! আহলে হাদীসদের
ব্রিটিশদের দালাল বলার আগে ইতিহাসের আয়নায়
আগে একবার নিজের চেহেরা তো দেখে
নিবেন।
তথ্যসূত্র:
১. The Deobandis & The British Government, আবূ
হিব্বান ও আবূ খুযাইমাহ আনসারি।
২. আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. : জীবন ও
কর্ম; মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম হক্কানী।
৩. ইন্ডিয়ান মুসলমানস্, ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টার।
অনুবাদ ও সম্পাদনাঃ সত্যান্বেষী রিসার্চ টীম
পরিবেশনা ও পুনঃ নিরীক্ষনঃ সত্যান্বেষী রিসার্চ
টীম

Comments

Popular posts from this blog

পৃথিবীর কয়েকটি রহস্যময় দ্বীপ ও জায়গার গল্প ও ছবি

শিয়া মতবাদ : ইসলামের নামে ভয়ংকর বিশ্বাস ও মুনাফেকি